Home

Saturday, May 17, 2014

থানায় জিডি যেভাবে করবেন

ভয়-ভীতি বা হুমকি দিলেই যে শুধুমাত্র জিডি করতে হয়-এমন কিন্তু নয়, নানা প্রয়োজনেই আপনাকে জিডি করতে হতে পারেযেকোনো ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি থানায় জিডি করতে পারেনকারো যদি কোনো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন-জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, পাসপোর্টসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় নথি হারিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে জিডি করাটা জরুরি ছাড়া হুমকি, ছিনতাই, এমনকি পরিবারের কেউ যদি
হারিয়েও যায় সেক্ষেত্রে জিডি করতে হবেযেকোনো সমস্যা হলেই সাথে সাথে থানায় জিডি করে ফেলুনপরে যদি আপনার কোনো ক্ষতি হয়েই যায়, তা হলে আইনি সহায়তা নিতে অনেক সহায়ক হবে ওই জিডি
কোথায় করবেন
সাধারণত অনেকে বুঝ তেই পারেন না, কোন থানায় জিডি করবেননিয়মমতে আপনার যাত্রা শুরু যেখান থেকে বা যে এলাকায় আপনার জিনিস হারিয়েছে বা খোয়া গেছে, সে এলাকার থানাকে প্রাধান্য দিতে পারেনতবে, আপনার ছিনতাই হলো এক থানার অধীনে আর আপনি জিডি করতে যাবেন অন্য থানায়, এমনটি ঠিক নয়অন্য সব ক্ষেত্রে নিজের থানায় জিডি করা যাবে
যা থাকবে দরখাস্তে
ঘটনার তারতম্যের কারণে জিডির উপাদানের পার্থক্য ঘটতে পারেতবে কিছু সাধারণ উপাদান আছে, যেগুলো একটি জিডির মধ্যে থাকা প্রয়োজনজিডি নিজে লেখা যায় আবার থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তাও লিখতে পারেননিচের কয়েকটি উপাদান জিডির মধ্যে থাকতে হবে
১. থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সম্বোধন করে লিখতে হবে এবং থানার নাম ও ঠিকানা লিখতে হবে
২. বিষয় : জিডি করার জন্য আবেদনএভাবে লিখতে হবে
৩. অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কা করলে জিডিতে আশঙ্কার কারণ উল্লেখ করতে হবে
৪. হুমকি দিলে হুমকি দেওয়ার স্থান, তারিখ, সময়, সাক্ষী থাকলে তাদের নাম, পিতার নাম ও পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে
৫. হুমকি প্রদানকারী পরিচিত হলে তার/তাদের নাম, পিতার নাম ও পূর্ণ ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে
৬. অপরিচিত হলে তাদের শনাক্তকরণের বর্ণনা দিতে হবে
৭. অপরাধ সংঘটনের আশঙ্কার ক্ষেত্রে সন্দেহভাজন ব্যক্তি, সন্দেহের কারণ উল্লেখ করে তাদের নাম, পিতার নাম, পূর্ণ ঠিকানা ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে
৮. জিডি নথিভুক্ত করে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করতে হবে
৯. সর্বশেষ জিডিকারীর নাম, স্বাক্ষর, পিতার নাম, পূর্ণ ঠিকানা ও তারিখ দিতে হবে
জিডির কপি সংগ্রহ
জিডি দুই কপি করতে হবেএক কপি নথিভুক্ত করার জন্য থানায় জমা দিতে হবে আর এক কপি থানার কর্মকর্তা কর্তৃক সহি মোহরকৃত করে নিজের কাছে রাখতে হবে
অনলাইন সুবিধা
নগরবাসীর জন্য জিডির প্রক্রিয়া সহজ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশ অনলাইন পদ্ধতি চালু করেছেআপনি চাইলে ঘরে বসেই অনলাইনে জিডি করতে পারেনএর বাইরেও অনলাইনে যে সুবিধা আছে, তা হলো এক সঙ্গে যদি আপনার অনেক জিনিস হারিয়ে যায়, তা তুলতে গেলে আপনার কাছে জিডির মূল কপি চাইতে পারেকিন্তু মূল কপিতো থাকবে একটাইসেক্ষেত্রে আপনি যদি অনলাইনে করে থাকেন তখন, শুধু জিডির নাম্বারটা ব্যবহার করলেই যথেষ্টতবে সতর্কবাণী হয়েছে অনেকেই ঘটনার তারিখ, সময় এবং স্থান উল্লেখ করতে ভুল করেনঘটনার তারিখ, স্থান, সময় তিনটি বিষয়ই অনেক গুরুত্বপূর্ণতা খেয়াল রাখতে হবে
জিডি করার পর
থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা ডিজি-টি পরে সংশ্লিষ্ট থানার ওসির কাছে পাঠান তিনি জিডি-টি পড়ে প্রয়োজনে কোনো উপপরিদর্শক বা সহকারী উপপরিদর্শকের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে থাকেনতদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এফআইআর দায়ের করেন
কিছু জরুরি তথ্য
জিডি করতে কোনো টাকা-পয়সা লাগে নাএমনকি আপনি যদি না-ও লিখতে পারেন, সেবা প্রদান কর্মকর্তা প্রয়োজনে তা লিখে দিবেন, আপনি শুধু নিচে স্বাক্ষর করবেন এর জন্য ওই কর্মকর্তাকে কোনো ফি দিতে হবে নাজিডি লিখে তা জমা দিতে হবে থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তার দপ্তরেতিনি তা গ্রহণ করে জিডির নাম্বার ও তারিখ বসাবেন এবং তা নির্ধারিত রেজিস্টারে তালিকাভুক্ত করবেনএবং আপনার কপিতে তা লিখে দিবেনযারা অনলাইনে জিডি করবেন, তারা চাইলে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে জিডির নাম্বারসহ তার একটি কপি সংগ্রহ করতে পারেন

No comments:

Post a Comment